Search This Blog

Monday, June 29, 2015

অর্থ মন্ত্রণালয়ের সিদ্ধান্তে পুলিশে বিশৃঙ্খলা

প্রধানমন্ত্রীর ঘোষণা অনুযায়ী ২০১২ সালের ৩০ জুলাই পুলিশের ইন্সপেক্টর (পরিদর্শক) পদকে দ্বিতীয় থেকে প্রথম শ্রেণিতে এবং উপসহকারী পরিদর্শক (এএসআই) ও সার্জেন্ট পদকে তৃতীয় থেকে একধাপ ওপরে তুলে প্রজ্ঞাপন জারি করে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়।

পুলিশ বাহিনীতে নতুন করে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টির আশঙ্কা করছেন পুলিশ সদস্যরা।পুলিশের ইন্সপেক্টরসহ কয়েকটি পদে অর্থ মন্ত্রণালয়ের সিদ্ধান্তই বাস্তবায়ন হতে যাচ্ছে। এতে তাদের গ্রেড. পদমর্যাদা ও বেতন আগের নিয়মেই দেয়া হবে। এ নিয়ে পুলিশ বাহিনীর মধ্যে চাপা ক্ষোভ বিরাজ করছে। ফলে বাহিনীতে এক ধরনের বৈষম্য সৃষ্টি হবে। এতে বিশৃঙ্খলা দেখা দেয়ারও আশঙ্কা রয়েছে।  

প্রধানমন্ত্রীর ঘোষণা অনুযায়ী ২০১২ সালের ৩০ জুলাই পুলিশের ইন্সপেক্টর (পরিদর্শক) পদকে দ্বিতীয় থেকে প্রথম শ্রেণিতে এবং উপসহকারী পরিদর্শক (এএসআই) ও সার্জেন্ট পদকে তৃতীয় থেকে একধাপ ওপরে তুলে প্রজ্ঞাপন জারি করে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়। এতে ইন্সপেক্টরদের বেতন দশম গ্রেড থেকে নবম এবং এসআই ও সার্জেন্টদের বেতন ১১তম থেকে দশম গ্রেডে আসে। তারও আড়াই বছর পর একধাপ নামিয়ে আগের গ্রেড নির্ধারণ করে ইন্সপেক্টর এবং এসআই ও সার্জেন্টদের নতুন পদ সৃজনে অনুমোদন দিচ্ছে অর্থ মন্ত্রণালয়।


সূত্রমতে, ২০১২ সালে প্রজ্ঞাপন জারির মধ্য দিয়ে পদমর্যাদার সঙ্গে ওপরের ধাপে বেতন-ভাতা নিশ্চিত হওয়ার খবরে থানায় থানায় মিষ্টি বিতরণ হয়েছিল। এর ভিত্তিতে ইন্সপেক্টর আর এসআই ও সার্জেন্টরা উচ্চধাপে বেতন-ভাতা, পদমর্যাদা পেলেও এক বাক্যের ওই প্রজ্ঞাপন মোটেও স্বস্তি দিচ্ছিল না স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়, অর্থ মন্ত্রণালয় ও পুলিশ বাহিনীকে। কারণ, নিন্মতর পদে থাকা পুলিশ সদস্যদের কিভাবে ওপরের পদে নেয়া হবে, সে সম্পর্কে প্রজ্ঞাপনে কোনো কিছুরই উল্লেখ নেই। এ অবস্থায় নতুন করে পুলিশের পদ সৃজন ও নিয়োগের ক্ষেত্রে ইন্সপেক্টর, এসআই ও সার্জেন্টদের বেতন ফের একধাপ নিচে নামিয়ে এনে তাতে অনুমোদন দিচ্ছে অর্থ বিভাগ। অর্থ মন্ত্রণালয়ের যুক্তি, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় থেকে জারি করা প্রজ্ঞাপনে ইন্সপেক্টর, এসআই ও সার্জেন্টদের বেতন-ভাতা অপরিবর্তিত রেখে শুধু তাঁদের পদমর্যাদা বাড়ানো হয়েছে। তাই এত দিন তাঁরা উচ্চতর গ্রেডে বেতন-ভাতা পেলেও তা যৌক্তিক নয়। এ বিষয়ে মন্ত্রণালয়ের অনুমোদনও নেই। তাই নতুন পদ সৃজনের ক্ষেত্রে আগের বেতন স্কেল ধরা হচ্ছে।

পুলিশে ৫০ হাজার নতুন পদ সৃষ্টির জন্য প্রধানমন্ত্রীর ঘোষণা অনুযায়ী পুলিশের তরফ থেকে আবেদন আসতে থাকে। তাতে অন্যান্য পদের সঙ্গে ইন্সপেক্টর, এসআই ও সার্জেন্ট পদ সৃষ্টিরও প্রস্তাব আসে। ২০১২ সালের প্রজ্ঞাপন অনুযায়ী, এসব প্রস্তাব পাঠানোর পর স্বরাষ্ট্র ও জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় ইন্সপেক্টরদের জাতীয় বেতন স্কেলের নবম গ্রেড অনুযায়ী ১১০০০-২০৩৭০ টাকা এবং এসআই ও সার্জেন্টদের দশম গ্রেড অনুযায়ী ৮০০০-১৬৫৪০ টাকার স্কেল প্রস্তাব করে অনুমোদন চায় অর্থ মন্ত্রণালয়ের কাছে। কিন্তু ইন্সপেক্টরদের বেতন দশম গ্রেড (৮০০০-১৬৫৪০) এবং এসআই ও সার্জেন্টদের ১১তম গ্রেড (৬৪০০-১৪২৫২) এর স্কেলে রেখে নতুন পদ সৃজনে সম্মতি দিচ্ছে অর্থ বিভাগ।

সূত্র জানায়, সে অনুযায়ী সম্প্রতি চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন পুলিশের মোট এক হাজার ২৯৪টি পদের মধ্যে ইন্সপেক্টরের ১৫ এবং এসআই ও সার্জেন্টদের ২৪০টি পদ সৃষ্টি করে তাঁদের বেতন স্কেল একধাপ নামিয়ে দিয়েছে অর্থ বিভাগ।

এর কারণ সম্পর্কে অর্থ মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব মাহবুব আহমেদ বলেন, এটি খুবই টেকনিক্যাল বিষয়। নিশ্চয়ই সব ধরনের নিয়ম-কানুন মেনেই অর্থ মন্ত্রণালয়ের বাজেট বাস্তবায়ন শাখা থেকে এটি করা হয়েছে।

অর্থ মন্ত্রণালয়ের বাজেট বাস্তবায়ন শাখার কর্মকর্তারা সাংবাদিকদের জানান, পুলিশের দাবি ছিল, তাঁদের পদমর্যাদা বাড়ানো হোক। তাই ২০১২ সালের প্রজ্ঞাপনে ইন্সপেক্টর, এসআই ও সার্জেন্টদের বেতন-ভাতা অপরিবর্তিত রেখে তাঁদের পদমর্যাদা তৃতীয় শ্রেণী থেকে দ্বিতীয় এবং দ্বিতীয় থেকে প্রথম শ্রেণীতে উন্নীত করা হয়। পরে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়কে চাপ দিয়ে উচ্চতর গ্রেডে বেতন-ভাতাও ভোগ করছেন তাঁরা। যা কখনই অর্থ মন্ত্রণালয় অনুমোদন করেনি। তাই ইন্সপেক্টরদের পদমর্যাদা প্রথম শ্রেণির কর্মকর্তা হলেও অর্থ বিভাগের হিসাবে তাঁদের বেতন-ভাতা জাতীয় বেতন স্কেলের ১০ নম্বর গ্রেডে এবং এসআই ও সার্জেন্টরা দ্বিতীয় শ্রেণির পদমর্যাদা পেলেও বেতন-ভাতা ১১ নম্বর গ্রেডেই অনুমোদিত রয়েছে। আর নতুন করে এসব পদ সৃজনের ক্ষেত্রে আগের গ্রেডেই বেতন-ভাতা নির্ধারণ করছে অর্থ বিভাগ।

জানাগেছে, এত দিন ধরে পুলিশ বাহিনীতে থাকা ইন্সপেক্টররা জাতীয় বেতন স্কেলের নবম গ্রেডে এবং এসআই ও সার্জেন্টরা দশম গ্রেডে বেতন-ভাতা পেলেও নতুন যেসব ইন্সপেক্টর এবং এসআই ও সার্জেন্ট আসবেন, তাঁরা পূর্বসূরিদের চেয়ে একধাপ নিচের গ্রেডে বেতন-ভাতা পাবেন। ফলে বাহিনীতে এক ধরনের বৈষম্য সৃষ্টি হবে। এতে বিশৃঙ্খলা দেখা দেয়ারও আশঙ্কা রয়েছে।

পুলিশের কয়েকজন ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা বলেন, এখন সার্জেন্ট, এসআই ও ইন্সপেক্টররা যে সুযোগ-সুবিধা পাচ্ছেন, নতুন নিয়োগ পাওয়ারা তার চেয়ে একধাপ নিচে বেতন-ভাতা পাবেন, যা পুরো পুলিশ বাহিনীর জন্য অস্বস্তিকর হয়ে উঠতে পারে।

স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা জানান, ইন্সপেক্টর পদকে প্রথম শ্রেণিতে উন্নীত করার ক্ষেত্রে অর্থ মন্ত্রণালয়ের সম্মতি থাকলেও এসআই ও সার্জেন্টদের দ্বিতীয় শ্রেণিতে উন্নীত করার ব্যাপারে আপত্তি ছিল। তা ছাড়া প্রজ্ঞাপনের আগে ইন্সপেক্টর, এসআই ও সার্জেন্টদের যোগ্যতা, দক্ষতা যাচাই-বাছাই না করে সরাসরি ওপরের শ্রেণিতে সবাইকে বেতন-ভাতা দেয়ার যৌক্তিকতা নিয়েও প্রশ্ন রয়েছে অর্থ ও স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তাদের। সরকারের প্রথম ও দ্বিতীয় শ্রেণির কর্মকর্তাদের নিয়োগ দেয়ার একমাত্র এখতিয়ার সরকারি কর্ম-কমিশনের (পিএসসি)। কিন্তু পুলিশের ক্ষেত্রে তা উল্টো। প্রভাব খাটিয়ে সার্জেন্ট, এসআই ও ইন্সপেক্টর নিয়োগের ক্ষমতা নিজেদের হাতেই রেখেছে পুলিশ।

মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা যায়, পুলিশ সপ্তাহের ঘোষণায় প্রধানমন্ত্রী এ বাহিনীতে ৫০ হাজার পদ সৃজনের ঘোষণা দেন। তারপর থেকে পুলিশের বিভিন্ন ইউনিট থেকে নতুন পদ সৃজন করে জনবল নিয়োগের প্রস্তাব আসতে থাকে। এরই অংশ হিসেবে চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন পুলিশ ১৫টি ইন্সপেক্টর, ২০০ এসআই এবং ৪০টি সার্জেন্টের পদসহ মোট এক হাজার ২৯৪টি পদ সৃজনের প্রস্তাব পাঠায়। স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এসব পদের জন্য বেতন কাঠামোর গ্রেড নির্ধারণ করে তা অনুমোদনের জন্য পাঠায় অর্থ মন্ত্রণালয়ে। তাতে ইন্সপেক্টরদের জাতীয় বেতন স্কেলের নবম গ্রেড এবং এসআই ও সার্জেন্টদের দশম গ্রেডে বেতন-ভাতা নির্ধারণের প্রস্তাব করা হয়। কিন্তু অর্থ বিভাগ ইন্সপেক্টরদের দশম গ্রেড এবং এসআই ও সার্জেন্টদের ১১তম গ্রেডে রেখে অনুমোদন দিয়ে গত ১১ জুন তা অনুমোদন করে। অর্থ মন্ত্রণালয়ের বাস্তবায়ন অনুবিভাগের উপসচিব জিন্নাত আরা স্বাক্ষরিত ওই অনুমোদনপত্র পুলিশের হাতে পৌঁছালে তা নিয়ে ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে।

সূত্রঃ যমুনানিউজ২৪.কম
2015/06/27

পুলিশে একই পদে দুই রকমের বেতন

Friday, June 26, 2015

পুলিশে একই পদে দুই রকমের বেতন

বাহিনীর মধ্যে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টির আশঙ্কা করছেন পুলিশ সদস্যরা.....................
পুলিশে একই পদে দুই রকমের বেতন

অনেকটা ঘটা করে ২০১২ সালের ৩০ জুলাই পুলিশের ইন্সপেক্টর (পরিদর্শক) পদকে দ্বিতীয় থেকে প্রথম শ্রেণিতে এবং উপসহকারী পরিদর্শক (এএসআই) ও সার্জেন্ট পদকে তৃতীয় থেকে একধাপ ওপরে তুলে প্রজ্ঞাপন জারি করে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়। এতে ইন্সপেক্টরদের বেতন দশম গ্রেড থেকে নবম এবং এসআই ও সার্জেন্টদের বেতন ১১তম থেকে দশম গ্রেডে আসে। তারও আড়াই বছর পর একধাপ নামিয়ে আগের গ্রেড নির্ধারণ করে ইন্সপেক্টর এবং এসআই ও সার্জেন্টদের নতুন পদ সৃজনে অনুমোদন দিচ্ছে অর্থ মন্ত্রণালয়। এতে বাহিনীর মধ্যে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টির আশঙ্কা করছেন পুলিশ সদস্যরা।

২০১২ সালে প্রজ্ঞাপন জারির মধ্য দিয়ে মানমর্যাদার সঙ্গে ওপরের ধাপে বেতন-ভাতা নিশ্চিত হওয়ার খবরে থানায় থানায় মিষ্টি বিতরণ হয়েছিল। এর ভিত্তিতে ইন্সপেক্টর আর এসআই ও সার্জেন্টরা উচ্চধাপে বেতন-ভাতা, মানমর্যাদা পেলেও এক বাক্যের ওই প্রজ্ঞাপন মোটেও স্বস্তি দিচ্ছিল না স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়, অর্থ মন্ত্রণালয় ও পুলিশকে। কারণ নিম্নতর পদে থাকা পুলিশ সদস্যদের কিভাবে ওপরের পদে নেওয়া হবে, সে সম্পর্কে প্রজ্ঞাপনে কোনো কিছুরই উল্লেখ নেই। এ অবস্থায় নতুন করে পুলিশের পদ সৃজন ও নিয়োগের ক্ষেত্রে ইন্সপেক্টর, এসআই ও সার্জেন্টদের বেতন ফের একধাপ নিচে নামিয়ে এনে তাতে অনুমোদন দিচ্ছে অর্থ বিভাগ। অর্থ মন্ত্রণালয়ের যুক্তি, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় থেকে জারি করা প্রজ্ঞাপনে ইন্সপেক্টর, এসআই ও সার্জেন্টদের বেতন-ভাতা অপরিবর্তিত রেখে শুধু তাঁদের পদমর্যাদা বাড়ানো হয়েছে। তাই এত দিন তাঁরা উচ্চতর গ্রেডে বেতন-ভাতা পেলেও তা যৌক্তিক নয়। এ বিষয়ে মন্ত্রণালয়ের অনুমোদনও নেই। তাই নতুন পদ সৃজনের ক্ষেত্রে আগের বেতন স্কেল ধরা হচ্ছে।

পুলিশে একই পদে দুই রকমের বেতন

পুলিশ সপ্তাহ উপলক্ষে আয়োজিত অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী পুলিশে ৫০ হাজার নতুন পদ সৃষ্টির ঘোষণা দেন। তারপর থেকেই পুলিশের তরফ থেকে আবেদন আসতে থাকে। তাতে অন্যান্য পদের সঙ্গে ইন্সপেক্টর, এসআই ও সার্জেন্ট পদ সৃষ্টিরও প্রস্তাব আসে। ২০১২ সালের প্রজ্ঞাপন অনুযায়ী, এসব প্রস্তাব পাঠানোর পর স্বরাষ্ট্র ও জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় ইন্সপেক্টরদের জাতীয় বেতন স্কেলের নবম গ্রেড অনুযায়ী ১১০০০-২০৩৭০ টাকা এবং এসআই ও সার্জেন্টদের দশম গ্রেড অনুযায়ী ৮০০০-১৬৫৪০ টাকার স্কেল প্রস্তাব করে অনুমোদন চায় অর্থ মন্ত্রণালয়ের কাছে। কিন্তু ইন্সপেক্টরদের বেতন দশম গ্রেড (৮০০০-১৬৫৪০) এবং এসআই ও সার্জেন্টদের ১১তম গ্রেড (৬৪০০-১৪২৫২) এর স্কেলে রেখে নতুন পদ সৃজনে সম্মতি দিচ্ছে অর্থ বিভাগ। সে অনুযায়ী সম্প্রতি চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন পুলিশের মোট এক হাজার ২৯৪টি পদের মধ্যে ইন্সপেক্টরের ১৫ এবং এসআই ও সার্জেন্টদের ২৪০টি পদ সৃষ্টি করে তাঁদের বেতন স্কেল একধাপ নামিয়ে দিয়েছে অর্থ বিভাগ।

এর কারণ সম্পর্কে অর্থ মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব মাহবুব আহমেদ কালের কণ্ঠকে বলেন, 'এটি খুবই টেকনিক্যাল বিষয়। নিশ্চয়ই সব ধরনের নিয়ম-কানুন মেনেই অর্থ মন্ত্রণালয়ের বাজেট বাস্তবায়ন শাখা থেকে এটি করা হয়েছে।'

অর্থ মন্ত্রণালয়ের বাজেট বাস্তবায়ন শাখার কর্মকর্তারা জানান, পুলিশের দাবি ছিল, তাঁদের পদমর্যাদা বাড়ানো হোক। তাই ২০১২ সালের প্রজ্ঞাপনে ইন্সপেক্টর, এসআই ও সার্জেন্টদের বেতন-ভাতা অপরিবর্তিত রেখে তাঁদের পদমর্যাদা তৃতীয় শ্রেণি থেকে দ্বিতীয় এবং দ্বিতীয় থেকে প্রথম শ্রেণিতে উন্নীত করা হয়। পরে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়কে চাপ দিয়ে উচ্চতর গ্রেডে বেতন-ভাতাও ভোগ করছেন তাঁরা, যা কখনই অর্থ মন্ত্রণালয় অনুমোদন করেনি। তাই ইন্সপেক্টরদের পদমর্যাদা প্রথম শ্রেণির কর্মকর্তা হলেও অর্থ বিভাগের হিসাবে তাঁদের বেতন-ভাতা জাতীয় বেতন স্কেলের ১০ নম্বর গ্রেডে এবং এসআই ও সার্জেন্টরা দ্বিতীয় শ্রেণির পদমর্যাদা পেলেও বেতন-ভাতা ১১ নম্বর গ্রেডেই অনুমোদিত রয়েছে। আর নতুন করে এসব পদ সৃজনের ক্ষেত্রে আগের গ্রেডেই বেতন-ভাতা নির্ধারণ করছে অর্থ বিভাগ।

অর্থাৎ এত দিন ধরে পুলিশ বাহিনীতে থাকা ইন্সপেক্টররা জাতীয় বেতন স্কেলের নবম গ্রেডে এবং এসআই ও সার্জেন্টরা দশম গ্রেডে বেতন-ভাতা পেলেও নতুন যেসব ইন্সপেক্টর এবং এসআই ও সার্জেন্ট আসবেন, তাঁরা পূর্বসূরিদের চেয়ে একধাপ নিচের গ্রেডে বেতন-ভাতা পাবেন। ফলে বাহিনীতে এক ধরনের বৈষম্য সৃষ্টি হবে। এতে বিশৃঙ্খলা দেখা দেওয়ারও আশঙ্কা রয়েছে।

পুলিশের একজন ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা বলেন, এখন সার্জেন্ট, এসআই ও ইন্সপেক্টররা যে সুযোগ-সুবিধা পাচ্ছেন, নতুন নিয়োগ পাওয়ারা তার চেয়ে একধাপ নিচে বেতন-ভাতা পাবেন, যা পুরো পুলিশ বাহিনীর জন্য অস্বস্তিকর হয়ে উঠতে পারে।

পুলিশ সপ্তাহের ঘোষণায় প্রধানমন্ত্রী এ বাহিনীতে ৫০ হাজার পদ সৃজনের ঘোষণা দেন। তারপর থেকে পুলিশের বিভিন্ন ইউনিট থেকে নতুন পদ সৃজন করে জনবল নিয়োগের প্রস্তাব আসতে থাকে। এরই অংশ হিসেবে চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন পুলিশ ১৫টি ইন্সপেক্টর, ২০০ এসআই এবং ৪০টি সার্জেন্টের পদসহ মোট এক হাজার ২৯৪টি পদ সৃজনের প্রস্তাব পাঠায়। স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এসব পদের জন্য বেতন কাঠামোর গ্রেড নির্ধারণ করে তা অনুমোদনের জন্য পাঠায় অর্থ মন্ত্রণালয়ে। তাতে ইন্সপেক্টরদের জাতীয় বেতন স্কেলের নবম গ্রেড এবং এসআই ও সার্জেন্টদের দশম গ্রেডে বেতন-ভাতা নির্ধারণের প্রস্তাব করা হয়। কিন্তু অর্থ বিভাগ ইন্সপেক্টরদের দশম গ্রেড এবং এসআই ও সার্জেন্টদের ১১তম গ্রেডে রেখে অনুমোদন দিয়ে গত ১১ জুন তা অনুমোদন করে। অর্থ মন্ত্রণালয়ের বাস্তবায়ন অনুবিভাগের উপসচিব জিন্নাত আরা স্বাক্ষরিত ওই অনুমোদনপত্র পুলিশের হাতে পৌঁছালে তা নিয়ে ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে।

http://epaperbangladesh.blogspot.com/

 
স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা জানান, ইন্সপেক্টর পদকে প্রথম শ্রেণিতে উন্নীত করার ক্ষেত্রে অর্থ মন্ত্রণালয়ের সম্মতি থাকলেও এসআই ও সার্জেন্টদের দ্বিতীয় শ্রেণিতে উন্নীত করার ব্যাপারে আপত্তি ছিল। তা ছাড়া প্রজ্ঞাপনের আগে ইন্সপেক্টর, এসআই ও সার্জেন্টদের যোগ্যতা, দক্ষতা যাচাই-বাছাই না করে সরাসরি ওপরের শ্রেণিতে সবাইকে বেতন-ভাতা দেওয়ার যৌক্তিকতা নিয়েও প্রশ্ন রয়েছে অর্থ ও স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তাদের। সরকারের প্রথম ও দ্বিতীয় শ্রেণির কর্মকর্তাদের নিয়োগ দেওয়ার একমাত্র এখতিয়ার সরকারি কর্ম-কমিশনের (পিএসসি)। কিন্তু পুলিশের ক্ষেত্রে তা উল্টো। প্রভাব খাটিয়ে সার্জেন্ট, এসআই ও ইন্সপেক্টর নিয়োগের ক্ষমতা নিজেদের হাতেই রেখেছে পুলিশ। এ নিয়ে জনপ্রশাসন, স্বরাষ্ট্র ও অর্থ মন্ত্রণালয়ে ক্ষোভও রয়েছে।
সূত্র: কালের কণ্ঠ, ২৭-৬-১৫